
আমি প্রবন্ধটি tablighnews365.com পাঠকের জন্য প্রকাশ মুনাসিব মনে করেছি। ইসলামী বিধি–বিধানের এই সীমান্ত যারা প্রহরা দেন, যারা ইসলামকে স্বরূপে উপস্থাপন করেন, সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম দামাত বারাকাতুহুম তাদের একজন।
আল্লাহ তাঁর মনোনীত এই দ্বীন সংরক্ষণের জন্য যুগে যুগে অবিচ্ছিন্নভাবে দীনের জামাত সৃষ্টি করে থাকেন। যারা সকল লোভ-লালসা, ভয়-ভীতি এবং চরম প্রতিকূলতা উজিয়ে দ্বীন রক্ষার মিশনে নিজেদের উৎসর্গ করে দেন।
নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত,
يَحْمِلُ هَذَا الْعِلْمَ مِنْ كُلِّ خَلَفٍ عُدُولُهُ، يَنْفُونَ عَنْهُ تَحْرِيفَ الْغَالِينَ، وَانْتِحَالَ الْمُبْطِلِينَ، وَتَأْوِيلَ الْجَاهِلِينَ .
প্রত্যেক প্রজন্মের নির্ভরযোগ্য নেককার উত্তরসূরীরা (পূর্বসূরীদের কাছ থেকে) এই দ্বীনী ইলম ধারণ করবে। আর বিকৃতি, ইসলামবিরোধী বাতিলপন্থিদের মিথ্যাচার এবং মূর্খদের অপব্যাখ্যা বিদূরিত করবে (এবং দ্বীনের স্বরূপ সংরক্ষণ করবে)।
নবীজী ইরশাদ করেনঃ
لَا تَزَالُ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِي ظَاهِرِينَ عَلَى الْحَقِّ، لَا يَضُرُّهُمْ مَنْ خَذَلَهُمْ، حَتَّى يَأْتِيَ أَمْرُ الل
এই উম্মতের একটি দল সর্বদা হকের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে। তাদের বিরুদ্ধাচরণকারীরা তাদের দ্বীনের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। যতক্ষন না যাবৎ কেয়ামতের নির্ধারিত আলামত প্রকাশ পায়। সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৯২০।
ইসলাম সংরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা। ইসলামধর্মে বিকৃতি সাধন করে কেউ কখনো পার পায় না। দাওয়াতে তাবলীগের গত কয়েক বছর যাবৎ অনেক পরীক্ষার পর এখন বাংলাদেশ সহ আমেরিকা ও সারা দুনিয়ায় এটা পরিস্কার যে, তাবলীগের কাজ হক, আর নিজামউদ্দিন মারকাজ এই কাজের সদরদপ্তর। বর্তমান হালতে বাংলাদেশে এই কাজকে সংরক্ষনের জন্য আল্লাহ তাআলা যেন তাকেই বেছে নিয়েছেন।
শুধু বাংলাদেশ নয় সূদুর মার্কিন মুল্লুকে এই কাজের প্রসারেও রয়েছে যার অনেক অবাক করা আবদান।
দাওয়াতে তাবলীগে মার্কিন মুল্লুকে প্রথম আগমন ১৯৭৬ সালেঃ
সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম দামাত বারাকাতুহুম ১৯৭২ সালে দাওয়াতে তাবলীগের মেহনত প্রথম শুরু করেন। এর মাএ ৪ বছর পর ১৯৭৬ সালে সূদুর বাংলাদেশ থেকে ৪ মাসের জামাত নিয়ে ছুটে আসেন মার্কিন মুল্লুকে। যে সময় হাতে গোনা ২/৪ জন বাংলাদেশী সারা মার্কিন মুল্লুকে দাওয়াতে তাবলীগের মেহনতে খুঁজে পাওয়া কঠিন ছিল। সেই সময় কয়েকজন আদিবাসী আমেরিকান, ২/৪ জন পাকিস্তানী ছাড়া, খুবই কম সংখ্যক মানুষ এই মেহনতে জড়িত ছিলেন।
এরপর ১৯৭৯ সালে মাস্তুরাত জামাত নিয়ে ৩ চিল্লার সফর করেন আমেরিকাতে।
১৯৮৩ সালে আবারও মাস্তুরাত জামাত নিয়ে ৩ চিল্লার সফর করেন আমেরিকাতে।
১৯৮৫ সালে পুরুষ জামাত নিয়ে ৪ মাসের সফরে আবারও ফিরে আসেন আমেরিকাতে।
১৯৮৯ সালের প্রথম থেকে ১৯৯০ সালের সেপ্টম্বর পর্যন্ত স্বপরিবার আমেরিকার Houston City in Texas – এ বসবাস শুরু করেন us permanent resident হিসাবে এবং সারা আমেরিকার তাবলীগের জিম্মাদার হিসাবে কাজ করতে থাকেন। হঠাৎ করে ঢাকায় অবস্থিত বাংলাদেশের তাবলিগের কেন্দ্রীয় মারকাজ “কাকরাইল মসজিদের ডিজাইনার ও বিশ্ববিখ্যাত দাঈ, তাবলীগ জামায়াতের জিম্মাদার বিমান ইঞ্জিনিয়ার হাজী আব্দুল মুকিত সাহেবের” চিঠি পেয়েই আমেরিকা থেকে আবার বাংলাদেশ ফিরে যান। আমেরিকাতে Permanent Resident হিসাবে বসবাসের লোভ তাকে আমেরিকা আটকে রাখতে পারেনি। দীনের তাকাজাকেই গুরুত্ব দিয়ে ছুঁড়ে ফেলেছেন Green Card!
পুনরায় আবার ২০০০ সালে ৫০ দিনের সফরে জামাত নিয়ে আমেরিকাতে আসেন।
২০০২ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত একাধিকবার আমেরিকার বিভিন্ন State – এ স্বল্প সময়ের জন্য সফর করেন। যে সমস্ত সফর গুলি ছিল US Regional Ijtema এবং Halaqa Old Worker Jode.
২০১৬ সালে ২ মাসের জন্য ৪ জোড়া মাস্তুরাত জামাত নিয়ে আবারও একাধিক State সফর করেন।
মহামারী কোভিড সময়েও ২০২১ সালের নভেম্বরে নিজ আহালিয়াকে নিয়ে সফর করেন আমেরিকাতে। উদ্দেশ্য চিকিৎসা ও চিকিৎসা শেষে লোকাল সাথীদের নিয়ে মাস্তুরাত জামাতে বের হওয়া। কিন্ত হঠাৎ করে আহালিয়ার অসুস্হতা ও আকস্মিক মৃত্যু হলে দীনের এই দাঈ মরদেহ নিয়ে ফিরে যান দেশে।
বর্তমানে দীনের এই দাঈ অবস্হান করছেন US National Mashwara Venue, Tampa, Florida-তে। ৬ জনের জামাত নিয়ে ছুটে আসেন গত ১৯ জুলাই। উদ্দেশ্য US National Mashwara-তে অংশ গ্রহন। US National শুরা আব্দুর রহমান খান সাহেব অদ্য ২৩ জুলাই National Mashwara – তে এই মহান দাঈ এর আমেরিকার মেহনত নিয়ে স্মৃতিচারন করেন। আগামীকাল ২৪ জুলাই এই দায়ীর দোয়ার মাধ্যমে শেষ হবে ৬ মাসিক এই National Mashwara ইনশাআল্লাহ।
দাওয়াত ও তাবলীগ দ্বীনের এক বহুত বড় কাজ। মানুষের ময়দানে দ্বীনী কাজের সূচনা হয়েছে দাওয়াত–তাবলীগ দ্বারা। আর বাংলাদেশের মতোই মার্কিন মুল্লুকেও দ্বীনী কাজের সূচনা হয়েছিল দাওয়াত–তাবলীগের এই মহান দাঈ–এর একান্ত চেষ্টায়। আজ আমেরিকার ৫০ state-এ ৫০টি মার্কাজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ৫০ State – ই Under the guidelines of World Markaz Nizamuddin InshaAllah.
সাহাবাদের পথ অনুসরনকারী ৭৪ বছর বয়সের একজন হযরত সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম দামাত বারাকাতুহুমঃ
আবু আইয়ুব আনসারীর বয়স ৯৬ বছর, অসুস্থ বিছানায় শুয়েছিলেন। ঘোষণা করা হলো, হে লোক সকল আল্লাহর পথে বের হয়ে যাও। আবু আইয়ুব আনসারী সাহাবীদের বললেন, আমিও তোমাদের সাথে আল্লাহর রাস্তায় বের হব। সাহাবায়ে কেরাম অনেক বুঝিয়ে বললেন আপনি দুর্বল। আইয়ুব আনসারী (রাঃ) বললেন, “তোমরা কি কোরানের আয়াতটি ভুলে গেছ? একটি মাএ আয়াত আমাকে আল্লাহর পথে যেতে বিরত রাখতে পারে না!” ….. “তোমরা হালকা ও ভারী উভয় অবস্থায় আল্লাহর রাস্তায় বের হও এবং তোমাদের মাল ও জান নিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ কর। এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে।” (৯ঃ৪১)।
হযরত সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম দামাত বারাকাতুহুম সম্পূর্ণ অসুস্হ, Wheelchair এবং অন্যের সাহায্য ছাড়া এক কদম পথও চলতে পারেন না। দীনের এই মহান দাঈ এমন অসহায়কালীন সময়ে মাএ ৬/৭ মাস আগে এই আমেরিকাতেই একমাএ বিশ্বস্ত জীবন সংগীকে হারিয়েছেন। ৬/৭ মাস পর আবার ছুটে এসেছেন দীনের তাকাজায় এই আমেরিকাতে। দীনের কাজকে ছড়িয়ে দিয়েছেন বিশ্বময়।
আল্লাহর কাছে এই মহান দাঈ–এর সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
I wanted to know Maulana Tariq Jameels stand on Nizamuddin with reference
LikeLike